সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, সারাদিন ধরে তুলনামূলকভাবে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের সাইডওয়েজ ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে, যদিও দিনের শেষে এই পেয়ারের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোন ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টও নির্ধারিত ছিল না, এবং মার্কেট এখনও মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। তিনি আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার কথা বলেছেন — এবারের লক্ষ্য হচ্ছে সেমিকন্ডাক্টরস। এই শুল্ক এখনো কার্যকর হয়নি, তবে এগুলো কার্যত ট্রাম্প ঘোষিত ৯০ দিনের "শুল্ক ছাড়" তালিকার ইতিবাচক প্রভাবকে বাতিল করে দিয়েছে। মূলত, ট্রাম্প একদিকে শুল্ক আরোপ করছেন, অন্যদিকে কিছু শুল্ক স্থগিত করছেন, কিন্তু বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। এর ফলে মার্কেটে আতঙ্কজনক এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে, বেশ এলোমেলো মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে এবং মূল্য খুবই ঘন ঘন দিক পরিবর্তন করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনে এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, তবে পরে মূল্য 1.1395–1.1413 জোন ব্রেক করে নিচের দিকে গিয়েছে এবং মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, এটাই দিনের একমাত্র উল্লেখযোগ্য ট্রেডিং সিগন্যাল ছিল। মনে করিয়ে দিচ্ছি, বর্তমানে মার্কেট অত্যন্ত অস্থির, তাই নির্ধারিত লেভেল ও জোন আগের মতো নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ করছে না। মার্কেটে এখন মূলত আবেগের ওপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করা হচ্ছে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা বলা কঠিন, কারণ কেউ জানে না ট্রাম্প আর কত শুল্ক আরোপ করবেন। বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারে, কারণ অনেক দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে — যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের পছন্দ হবে না বলেই মনে হচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্ক "ছাড়" দেওয়ার কারণে ডলার শক্তিশালী হতে পারেনি, বরং এখন পুরো মনোযোগ চীনের সঙ্গে বাণিজ্যসংক্রান্ত দ্বন্দ্বের দিকে কেন্দ্রীভূত হয়েছে, যেখানে এখনো কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার মার্কেটে সম্ভবত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বজায় থাকবে। আমরা এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করব না, কারণ প্রতিদিনই বাণিজ্যসংক্রান্ত খবর আসছে। তাই মূল্য যেকোনো দিকেই দ্রুত যেতে পারে — তবে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সম্ভাবনাই বেশি।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1395–1.1413, 1.1474–1.1483 লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। মঙ্গলবার জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে ZEW ইকোনমিক সেনটিমেন্ট সূচক প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদনগুলো মার্কেটে কিছুটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তবে তা দীর্ঘস্থায়ী বা শক্তিশালী প্রভাব ফেলবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।