মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের সামান্য দরপতন হয়েছে, যা কেবলই একটি টেকনিক্যাল কারেকশন হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। গতকাল — এবং সামগ্রিকভাবে — বর্তমান মৌলিক পরিস্থিতি এবং মার্কেটের ট্রেডারদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ডলারের শক্তিশালী হওয়ার কোনো বাস্তব কারণ ছিল না। এখন মার্কেটের ট্রেডাররা কেবলমাত্র বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত সংবাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। যদি কোনো খবর আসে — ডলার দরপতনের শিকার হয়। যদি কোনো খবর না থাকে, তখন সাধারণত ডলারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা যায় বা মূল্য স্থির থাকে, যেমনটি আমরা গত কয়েকদিন ধরে দেখে আসছি।
আমাদের এখনও ধারণা করছি, মার্কেটের ট্রেডাররা ডলারের মূল্যকে ঊর্ধ্বমুখী করতে পারে এমন অনেক বিষয় উপেক্ষা করছে, কারণ মার্কিন অর্থনীতি এখনো ইউরোপ বা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। হ্যাঁ, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে, তবে ইউরোপ বা যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতিও খুব একটা ভালো নয়, কারণ বাণিজ্যযুদ্ধ তাদেরও প্রভাবিত করছে। তবে মার্কেটের ট্রেডাররা ট্রাম্পের সুরক্ষামূলক নীতিমালার দ্বারা সরাসরিভাবে প্রভাবিত হয়ে ডলার, মার্কিন স্টক এবং বন্ড বিক্রি করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এলোমেলো ও বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। আমরা ইতিপূর্বেও একাধিকবার এটি উল্লেখ করেছি। অবশ্যই সিগন্যাল গঠিত হচ্ছে, তবে সেগুলো নির্ভরযোগ্যভাবে কার্যকর হচ্ছে না, এবং কেবল তখনই এই পেয়ারের মূল্যের কার্যকর মুভমেন্ট দেখা যায়, যখন ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ করেন বা বিদ্যমান শুল্কের মাত্রা বৃদ্ধি করেন।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। এই প্রবণতা কতদিন স্থায়ী হবে তা জানা নেই, কারণ কেউ জানে না যে ট্রাম্প আর কত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবেন। বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে, কারণ অনেক দেশ পাল্টা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে—যা মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য অবশ্যই অস্বস্তির কারণ হবে। ট্রাম্পের তথাকথিত শুল্ক "ছাড়" দেয়ার পরও ডলার শক্তিশালী হতে পারেনি, এবং এখন মার্কেটের ট্রেডারদের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সংঘাতের দিকে, যেখানে এখনো কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
বুধবার মার্কেটে সম্ভবত আতঙ্ক বিরাজ করবে। আমরা এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করব না, কারণ যেকোনো সময় বাণিজ্য-সংক্রান্ত নতুন খবর আসতে পারে। এর অর্থ হলো যেকোনো দিকেই হঠাৎ করে বড় ধরনের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে যেসব লেভেল বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1395–1.1413, 1.1474–1.1483।
বুধবার ইউরোজোনে দ্বিতীয় ধাপে মুদ্রাস্ফীতির অনুমান সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রয় ও শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এই প্রতিবেদনগুলো তুলনামূলকভাবে স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন হিসেবে বিবেচিত হয়, যদিও প্রথম নজরে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হতে পারে। তবুও এটি কেবল দ্বিতীয় অনুমান — এবং এর মধ্যেও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ECB) যখন আর্থিক নীতিমালার নমনীয়করণ চালিয়ে যাচ্ছে, তখনো ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।